স্বৈরশাসকের কপালে গণঅভ্যুত্থান লেখা হয়ে গেছে – ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা’র) সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান বলেছেন, আওয়ামী ভোটারবিহীন স্বৈরশাসকের কপালে গণঅভ্যুত্থান লেখা হয়ে গেছে। এই সরকারের বিদায় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। নিজেদের শেষ রক্ষার জন্য আ’লীগ এখন পুলিশ বাহিনী, ছাত্রলীগ বাহিনী, যুবলীগ বাহিনীকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। তবে ইতিহাসের স্বাক্ষী দেওয়া রক্ষীবাহিনী দিয়েও ক্ষমতার শেষ রক্ষা হয়নি। ইনশাআল্লাহ জনগণের এবারের গণঅভ্যুত্থানেও আওয়ামী মসনদের শেষ রক্ষা হবে না।

তিনি বলেন, আফসোস হয়, স্বাধীনতার পর থেকে দিল্লি আমাদের সাথে বেনিয়ার মত আচরণ করেছে! গত এক যুগ ধরে আমাদের পানিতে এবং সীমান্তে বুলেটে মেরেছে! আমার বোন ফেলানী হত্যার বিচার হয়নি! আজ শেখ হাসিনা সরকারের ভারত সফর আমাদের দূঃখ হয়। ভারতের দাদাগিরি করে কি পেলাম আমরা? তবে এই সফর ভারত – বাংলাদেশের সমঝোতা চুক্তির নয়। এই সফর আওয়ামী লীগ সরকারকে শেষ রক্ষার সফর। নতুবা আগের চুক্তি গুলো গেল কোথায়?

জাগপা’র সভাপতি আরো বলেন, আমরা আজ কোথায় দাঁড়িয়ে আছি? উন্নয়নশীল দেশের আওয়াজ তুলে এই জালীম সরকার আমাদের পেটে ও পিঠে মারতে শুরু করেছে। আজ আমার দেশের প্রায় ৫০ লাখ মধ্যবিত্ত পরিবার দারিদ্র সীমার তালিকায় নেমে এসেছে। প্রায় দেড় কোটি পরিবার আয়ের সাথে ব্যয়ের হিসাব মিলাতে পারছেনা। কৃষি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে কৃষক আবাদ করতে পারছেনা। নিত্যপণ্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষ, নিম্ন আয়ের মানুষ, চাকুরীজীবী, পেশাজীবীরা পরিবারের শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা চালাতে পারছেনা। সুতরাং হিল্লি-দিল্লি নয়, দেশ ও জনগণ বাঁচাতে সবাইকে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম বলেছেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার জনগণ নয় বরং প্রতিবেশী দেশের ওপর নির্ভরশীল। এই সরকার জনগণের সরকার না। জনগণের অধিকার আদায় ও বর্তমান রাজনৈতিক সরকারের অপসারণে আন্দোলন করতে হবে। বিরোধীদলগুলোকে সবার সঙ্গে সমন্বয় করে এ আন্দোলন পরিচালনা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতে আমরা গৃহপালিত বিরোধীদল ও জাতীয় বেইমান চাই না। আমরা কোনো প্রতিবেশী দেশের সিদ্ধান্ত মানতে চাই না। আমরা জনগণের সিদ্ধান্তে চলতে চাই।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল হালিম বলেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে সবাই রাস্তায় নেমেছে। এই সরকার নিশিরাতের ভোট ডাকাত সরকার। আগামীতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারকে প্রতিহত করবো। এই সরকার দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করছি আর গণতন্ত্র হত্যাকারী আওয়ামী লীগ বিরোধী নেতাকর্মীদের উপর হামলা-মামলা চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারকে হটানো সম্ভব নয়, তাই আমাদের এক হয়ে রাজপথে থাকতে হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন দিতে হবে।

নেতৃবৃন্দ আজ মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর ২০২২) সকালে যুব জাগপা’র ৩২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ” স্বাধীন সার্বভৌমতত্ব রক্ষার অঙ্গিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।

যুব জাগপার সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সিরাজুল ইসলামের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জাগপা’র সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম,এনডিপির চেয়ারম্যান কারী আবু তাহের, জাতীয় দলের এড. এহসানুল হুদা,জাগপা’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, আসাদুর রহমান খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শফিকুল ইসলাম, ইসলামি যুব আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল আতিকুর রহমান মুজাহিদ, এবি যুব পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম ইলিয়াছ আলী, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান, যুব জাগপা’র মাহিদুর রহমান বাবলা, জিয়াউর রহমান জুয়েল, আনোয়ার হোসেন, সাহাবু উদ্দিন সাবু, বিপুল সরকার, আসাদুজ্জামান নুর, পাভেল মিয়া, মিজানুর রহমান, শাহ আলম, মোঃ হাসান প্রমুখ।