অধ্যাপিকা রেহানা প্রধান
১৯৫৩ সালের ২রা মে, বগুড়া জেলা সদরের মাটিডালী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রেহানা। পিতা শহিরউদ্দিন আকন্দ পেশায় ছিলেন ডাক্তার আর মাতা মমিজান নেছা গৃহিনী। ১০ ভাই বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ রেহানা ছোটবেলা থেকেই ছিলেন দুরন্ত। শিক্ষা জীবনের শুরু বগুড়ার মাটিডালী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবং পরবর্তীতে বগুড়া সরকারী মহিলা কলেজ। উচ্চতর ডিগ্রির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
শৈশব থেকেই দেশ ও রাজনীতি নিয়ে ভাবতেন রেহানা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বগুড়ায় প্রথম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম ডাবলু, তার বড় ভাইয়ের পুত্র। শহীদ পরিবারের কন্যা রেহানা ১৯৭১-৭২ সালে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভানেত্রী ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নকালে ১৯৭৩-৭৪ সালে তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
১৯৭৪ সালের দুর্নীতি বিরোধী সংগ্রাম, ১৯৮০ সালে জাগপা প্রতিষ্ঠা, ১৯৮১ সালের দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা সংগ্রাম, ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ১৯৯৩ সালের বেরুবাড়ির আন্দোলন, ১৯৯৫ সালে ইয়াসমিন হত্যা আন্দোলন সহ দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাঁর গুরুত্বপূর্ন অবদান ও ত্যাগ রয়েছে।
রেহানা প্রধান দীর্ঘ ১৩ বছর জাগপার সহ-সভাপতি হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৭ সালের ২১ মে জাগপার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, শফিউল আলম প্রধানের ইন্তেকালের পর তিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। একই বছরের ২৯ নভেম্বর বিশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে রেহানা প্রধান জাগপার সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি তার বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
রেহানা প্রধান দীর্ঘ সময় লালমাটিয়া মহিলা কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপিকা ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালে পবিত্র হজ্জ এবং ২০১৫ সালে ওমরাহ হজ্জ পালন করেন। ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর সকাল ৭ঃ৩০ মিনিটে রেহানা প্রধান নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন।